ধরুন আপনি আপনার পরিবার বা বন্ধুদের সাথে দুপুরের খাবার খাচ্ছেন। হঠাৎ আপনাদের মধ্যে কেউ ছাগলের মত কাশতে শুরু করলেন। গলা পরিষ্কার করার চেষ্টা করার সাথে তার কাশির তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পেতে থাকলো, দম বন্ধ হয়ে গেলো। এখন আপনি তাকে সাহায্য করতে চান। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে আপনার আসলে কি করা উচিত সেটাই আপনার জানা নেই।
খাওয়ার সময় দম বন্ধ হওয়া খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। এটি তখনই ঘটে যখন বাতাসের উত্তরণটি হঠাৎ করে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ হয়ে যায় তখন শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। এটি মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহের প্রবাহকে সীমাবদ্ধ করতে পারে, সুতরাং এই জাতীয় পরিস্থিতিতে দ্রুত কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দম বন্ধ হয়ে গেলে কি করবেন?
এসব পরিস্থিতিতে কিভাবে প্রাথমিক চিকিতসা দিয়ে জীবন বাঁচাতে হবে জেনে নিন –
দম বন্ধ হওয়ার লক্ষণ
যদিও ভারী কাশি শ্বাসরোধের একটি সাধারণ লক্ষণ তবে উইন্ড পাইপটিতে বাধার কারণে ব্যক্তি শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে কিনা তা সনাক্ত করার জন্য অন্যান্য সংকেত রয়েছে। এখানে কয়েকটি লক্ষণ আপনাকে অবশ্যই দেখতে হবে:
- কথা বলতে অসুবিধা
- শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা
- শ্বাস নেয়ার চেষ্টা করার সময় অদ্ভুত শব্দ
- জোর করে কাশি
- ত্বক, ঠোঁট এবং নখ নীল হয়ে যাওয়া
- চেতনা হ্রাস
আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থার উপর আপনার প্রতিক্রিয়া নির্ভর করে। যদি সে জোর করে কাশি দিতে সক্ষম হয় তবে তার উচিত এটি করা। এটি বাধা দূর করতে সাহায্য করবে। যদি সে কথা বলতে বা কিছু করতে না পারে তবে শ্বাসনালী পরিষ্কার করার জন্য ‘ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ’ পদ্ধতির চেষ্টা করার পরামর্শ দেয়া হয়।
ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ পদ্ধতি
আমেরিকান রেড ক্রস কারো দম বন্ধ হওয়ার সমস্যা হলে ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ পদ্ধতির পরামর্শ দেয়।
পেটে আঘাত করার পদ্ধতি
- আক্রান্ত ব্যক্তির পেছনে দাঁড়ান এবং তার কোমর দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরুন।
- আক্রান্ত ব্যক্তিকে সামান্যভাবে সামনের দিকে বাঁকা করুন। এক হাত দিয়ে মুষ্টি তৈরি করুন এবং একে নাভির উপরে রাখুন। অন্য হাত দিয়ে মুষ্টি ধরুন।
- জোর দিয়ে পেটে কিছুটা চাপ দিন- যেন আপনি ব্যক্তিটিকে উপরে তোলার চেষ্টা করছেন।
পেছনে আঘাত করার পদ্ধতি
- দম বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্যক্তির পাশে দাঁড়ান এবং ব্যক্তির বুকজুড়ে আপনার একটি বাহু রাখুন।
- সামান্যভাবে কোমরে এমনভাবে বাঁকুন যাতে উপরের শরীরটি মাটির সাথে সমান্তরাল হয়।
- আপনার অন্য হাত দিয়ে তার কাঁধে পাঁচবার আঘাত করুন।
প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পরও যদি ব্যক্তির অবস্থার উন্নতি না হয়, তবে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ফোন করুন। যদি ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যায়, তবে সিপিআর দেয়ার চেষ্টা করুন।